বড়দের দাঁতের যত্নঃ
দাঁতের মাঝে ফাঁকা বেশি হলে ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ ব্যাবহার করতে পারেন। জিহ্বা পরিস্কার করুন, জিব পরিস্কারের জন্য ফার্মেসিতে টাং ক্লিনার পাওয়া যায়। আঙ্গুল দিয়ে মাড়ি পরিস্কার করুন। এরপর ভালভাবে কুলি করুন। সঠিক টুথব্রাশ বাছাই করুন: দুটি জিনিস দাঁত পরিস্কারের জন্য জনপ্রিয়। মেসওয়াক ও ব্রাশ।
• মেসওয়াক কয়েক হাজার বছর ধরে পৃথিবীতে ব্যাবহৃত হচ্ছে। মেসওয়াক হিসেবে জাইতুন (এক ধরনের জলপাই) গাছের ডাল বেশি জনপ্রিয়।
.যে টুথব্রাশটির উপরের শলাকাগুলো অতিরিক্ত শক্ত নয় আবার নরমও নয় অথচ ব্রাশের হ্যান্ডেল হাতের আঙ্গুল দিয়ে ধরার জন্য যথেষ্ট সুবিধাজনক এবং মুখের সকল দাঁতের অবস্থান অর্থাৎ দাঁতের উপর নীচ এবং ভিতরে বাহিরে সহজে আনা নেয়া করা যায় সেরকম টুথব্রাশ বেশী কার্যকর। ইলেকট্রনিক ব্রাশও ব্যবহার করতে পারেন।
কতটুকু সময়:
প্রতিদিন দুই বেলা ব্রাশ, সকালে নাস্তার পরে আর রাতে ঘুমানোর পূর্বে।
দাঁত ব্রাশের জন্য দুই থেকে তিন মিনিটই যথেষ্ট সময়। ব্রাশ করার নিয়মঃ মুখের ভিতরে বিভিন্ন স্থানকে ৩ টি ভাগে ভাগ করা যায়,
যেমনঃ উপরের মাড়ির বাইরের অংশ বাম থেকে ডানে> নীচের মাড়ির বাইরের অংশ ডান থেকে বামে> উপরের মাড়ির ভেতরের অংশ বাম থেকে ডানে> নীচের মাড়ির ভেতরের অংশ ডান থেকে বামে > উপরের মাড়ির অক্লুশাল (যে অংশ দিয়ে খাবার চাবানো হয়) অংশ বাম থেকে ডানে> নীচের মাড়ির অক্লুশাল অংশ ডান থেকে বামে।
প্রতি ভাগের জন্য ১ মিনিট সময় নির্ধারণ করা যায়। অনেকে টিভি দেখতে দেখতে বা গল্প করতে করতে বা অন্য কিছু কাজে সময় ব্যয় করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষন দাঁত ব্রাশ করেন তাদের মধ্যে বেশীর ভাগেরই এনামেল ক্ষয় হয়ে এরোসন হতে পারে এবং দাঁত অতি সংবেদনশীল হয়ে ঠান্ডা পানি বা গরম চা তে দাঁত শিরশির করতে পারে। এক্ষেত্রে ডেন্টাল ফিলিং প্রয়োজন হয়। ব্রাশ করার পরপরই বিশেষজ্ঞরা কুলি করতে নিষেধ করেন। ব্রাশ করার পরে শুধু থুথু ফেলতে হবে। কিছুক্ষন পরে কুলি করতে হবে।
ব্রাশ করতে হবে ওপর>নিচ>ওপর ডিরেকশানে, সামনে পেছনে ডিরেকশানে ব্রাশ করলে দাঁত ক্ষয় হবে। অতিরিক্ত ঘষাঘষি বা শক্তভাবে ব্রাশ না করা।
সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার:
দাঁত ব্রাশ দাঁতের বাহিরের অংশ এবং ভিতর দিককার অংশ এবং সেই সাথে জিহ্বার উপরিভাগও ব্রাশ করতে হবে, সত্যি কথা হলো, দাঁতের কোনো স্থানেই এমনকি জিহ্বাতেও যেনো খাদ্যকণা লেগে না থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্রাশ করার পরপরই এটা না করা উত্তম। ব্রাশ করার আধ ঘন্টা পরে বা খাওয়ার পূর্বে মাউথওয়াশ ব্যাবহার করা উত্তম। খেয়াল রাখবেন মাউথওয়াশটি যেন এ্যালকোহল ফ্রি হয়।
কোন ধরণের টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন:
অনেক সময় আমরা টিভি বা রেডিও বিজ্ঞাপন শুনে বা দেখে টুথপেস্ট ব্যবহার করি এবং বলা হয় এগুলো দাঁতকে অনেক ঝকঝকে সাদা করে বা অনেক শিরশির দাঁতকে ভাল করে ইত্যাদি নানা বিজ্ঞাপন। কিন্তু,আসলে কি সব সত্যই তাই, আপনার ডেন্টিস্ট এর কাছে জেনে নিন কোন টুথ পেস্ট আপনার জন্য ভালো। কারণ দাঁত শিরশির করার জন্য ব্যবহৃত টুথ পেস্ট দীর্ঘদিন ব্যবহারে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশী। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে যেকোন ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করা।
অতিরিক্ত সফট ড্রিংকস দাঁতের জন্য ক্ষতিকর:
অনেক ধরণের এনার্জি ড্রিংকস, ডায়েট সোডা বা চকলেট কফি এমনকি স্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন আপেল, অরেঞ্জ জুস এবং চিনিযুক্ত কফি আপনার দাঁতের এনামেলকে সহজেই ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। তাই এই জাতীয় খাবার পর দাঁত ব্রাশ বা কুলকুচি করা জরুরী। কারণ টক জাতীয় খাবার মুখে জমে থাকলে দাঁতের এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। টুথব্রাশ পরিষ্কার রাখুন। টুথ ব্রাশটিকে বাথরুমে রাখা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
একটি ব্রাশ কতদিন ব্যবহার করবেন:
আমেরিকান ডেন্টাল এসোাসিয়েশন এর মতে, একটি ব্রাশ তিন থেকে চার মাস ব্যবহার করাই নিরাপদ। আপনি ব্রাশের ব্রিসলগুলোর দিকে খেয়াল করুন যখনই ব্রিসলগুলো নুইয়ে পড়বে বা বাঁকা হয়ে যাবে তখনই ব্রাশটিকে বদলাতে হবে। কারণ বাঁকা ব্রিসলের টুথব্রাশ সঠিকভাবে খাদ্যকণা পরিষ্কার করতে পারে না। এখন এমন সব ব্রাশ তৈরি হচ্ছে যার আয়ু শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রঙ পরিবর্তন করে।